ঢাকায় জনসভা সফল করার লক্ষ্যে ইসলামিক ফ্রন্ট এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
২৬ আগস্ট’২৩ ইং রাজধানীতে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর বিশাল জনসভা
সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন এবং সন্ত্রাস- জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে ২৬ আগস্ট ‘২৩ইং শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিন গেইটে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে গঠিত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ নিবন্ধিত জাতীয় রাজনৈতিক দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর (চেয়ার) উদ্যোগে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত জনসভায় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আল্লামা ছৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী ও মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইরসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং পীর- মাশায়েখ, খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার ও পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন। এ জনসভাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার- প্রচারণা চলছে। সারাদেশে পোস্টার – ব্যানার, পেস্টুনে ছেয়ে গেছে। লিফলেট- প্রচারপত্র বিতরন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে জনসভা প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। উপরন্তু জনসভা সফলকল্পে বিভিন্ন জেলায় মিছিল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে। এ জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগম হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও জনসভা সংশ্লিষ্ট যাবতীয় অফিসিয়াল কর্মকাণ্ডও চুড়ান্ত হয়েছে বলে জনসভা প্রস্তুতি কমিটির পক্ষ থেকে আহুত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হয়।
অদ্য ২৩ আগস্ট ‘২৩ ইং বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকা পুরানা পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- জনসভা প্রস্তুতি কমিটির সচিব স ম হামেদ হোসাইন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন-
জনসভা প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক পীরে তরিকত আল্লামা মোশাররফ হোসেন হেলালী ও ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব পীরে তরিকত আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী,ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সচিব মোহাম্মদ তরিকুল হাসান লিংকন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা এ এম মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিম, এডভোকেট জসিম উদ্দিন মাহমুদ, আবু নোমান ভূঁইয়া, মাওলানা জিয়াউল হক রেজভী, দেলোয়ার হোসেন ফয়সাল, আবু সাঈদ শাফিন, মোহাম্মদ তারেক হোসাইন, মোহাম্মদ সাঈদ হোসেন, মোহাম্মদ কবির হোসেন প্রমূখ।
এতদসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যটি সংযুক্ত করা হলো।
তারিখ: ২৩. ০৮. ২০২৩ ইং
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আগামী২৬ আগস্ট’২৩ ইং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইটে অনুষ্ঠিতব্য বিশাল জনসভা সফলকল্পে
সংবাদ সম্মেলন
আজকের এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং সম্মানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অনেক ত্যাগ ও কষ্ট শিকার করে আপনারা আজকের এ সংবাদ সম্মেলনে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আমাদের এ মহতী উদ্যোগ বাস্তবায়নে সাড়া দিয়েছেন, তজ্জন্য আপনাদেরকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে অভিনন্দন, মোবারকবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আমরা জানি- সাংবাদিকরা হচ্ছে জাতির বিবেক। জাতীয় জীবনের যে কোন দুর্যোগপূর্ণ মূহুর্তে সাংবাদিকদের সাহসী ও সোচ্চার ভূমিকা সত্যিই অনস্বীকার্য। জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থ সংরক্ষণে জীবনবাজী রেখে সম্মানিত সাংবাদিকরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ও রেখে চলেছেন তা আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। আশা করি
আমাদের এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সংবাদ মিডিয়ায় প্রচার পুর্বক আমাদের কৃতার্থ করবেন।
সম্মানিত সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা।
আপনারা জানেন- বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদকাল ইতোমধ্যে প্রায় শেষ হতে চলেছে। ২০২৩ এর ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়। এটি কোনভাবেই বিস্মৃত হবার নয় যে, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে নির্বাচন। যেজন্য প্রয়োজন একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ । তবেই জনমতের প্রতিফলন তথা ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনরূপ বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়না। উপরন্তু এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক সহায়তাও আবশ্যক। কিন্তু দূঃখজনক হলেও সত্য যে, দেশের বৃহত্তম দুটি দলের রশি টানাটানি রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রমাগত উত্তাপ বৃদ্ধি করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের রাজপথ দখলের অসম প্রতিযোগিতা এবং পাল্টাপাল্টি অবস্থান রাজনৈতিক অঙ্গনকে ক্রমশঃ সংঘাতময় করে তুলছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক দু দলের অবাঞ্ছিত জেদাজেদি এবং ক্ষমতায় যাওয়ার উদগ্র বাসনা ক্রমাগত নির্বাচনের পরিবেশকে আরও অধিকতর অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলে আমরা আশংকা করছি। এমনিতর পরিস্থিতিতে সকল রাজনৈতিক দলের পারস্পরিক ঐকমত্য খুবই জরুরী। আর আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সর্বপ্রকার সমস্যার অবসান হতে পারে বলে মনে করে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ।
সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা-
এটি অনস্বীকার্য যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার অর্ধ শতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও দেশে নির্বাচন এর ক্ষেত্রে অদ্যাবধি একটি শক্তিশালী ও টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে উঠে নি। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কেউ দলীয় সরকার, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেউ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি উত্থাপন করছে। অথচ এসবের কোনটিই সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়না। প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কখনও কোন সরকার নির্বাচন পরিচালনা করে না। নির্বাচন পরিচালনা করে নির্বাচন কমিশন। তাই বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ নং অনুচ্ছেদে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেটি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবে এবং কেবল সংবিধান ও আইনের অধীন হইবে। সুতরাং সংবিধানের এ ধারা অনুযায়ী সরকার নির্বাচন পরিচালনা করবে না। নির্বাচন এর সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে সরকারের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত একটি স্বাধীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন কর্তৃক। তবে এক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, দেশের নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন বলা হলেও মূলতঃ এটি স্বাধীন কিনা তা নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক আছে। আর এটিই হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে প্রধান এবং একমাত্র অন্তরায়। তাই এক্ষেত্রে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ৫টি দাবির উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। যা নিম্নরূপ
১। নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান মোতাবেক একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, স্বয়ংসম্পূর্ণ, শক্তিশালী ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করা।
২। নির্বাচন কমিশন এর সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে সরকারের নির্বাহী বিভাগের আওতামুক্ত রাখা।
৩। কমিশনের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজন অনুযায়ী সামরিক- আধা সামরিক ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনী সরবরাহ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকা।
৪। নির্বাচন কমিশনের সকল পরামর্শ-নির্দেশ রেডিও-টেলিভিশনসহ সকল সম্প্রচার মিডিয়া ও কর্তৃপক্ষ যথার্থ প্রচারে বাধ্য থাকা।
৫। এতদসংক্রান্ত আইনের একটি চুড়ান্ত খসড়া প্রনয়ন করতঃ অধ্যাদেশ আকারে জারি করে এটা বলবৎ এবং পরে তা সংসদে অনুমোদন করা।
তবেই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনপ্রকার দ্বিধা-সংশয়ের অবকাশ থাকবে না। স্মর্তব্য যে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর কোন বিকল্প সরকার গঠনের সুযোগ অবশিষ্ট নেই। তাই নির্বাচনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ব্যাতিরেকে আর কোন উপায়ই নেই। সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন কমিশনকে সরকারের প্রভাবমুক্ত রেখে সম্পূর্ণ নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করা হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সামগ্রিক জটিলতা নিরসন অধিকতর সম্ভব। সুতরাং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ প্রদত্ত এ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করা হলে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা অবসান হবে বলে আমরা আশাবাদী। আর এ লক্ষ্যে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আগামী ২৬ আগস্ট ‘২৩ইং শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইটে সরকারের প্রভাবমুক্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন এবং সন্ত্রাস- জঙ্গিবাদমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত জনসভায় ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ এর জাতীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পীর- মাশায়েখ, খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার ও পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন। এ জনসভাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার- প্রচারণা চলছে। সারাদেশে পোস্টার – ব্যানার, পেস্টুনে ছেয়ে গেছে। লিফলেট- প্রচারপত্র বিতরন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে জনসভা প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা কমিটির সাথে মতবিনিময় সভা প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। উপরন্তু জনসভা সফলকল্পে বিভিন্ন জেলায় মিছিল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার কর্মযজ্ঞ চলমান রয়েছে। আমরা এ জনসভায় ব্যাপক মানুষের জমায়েত হবে বলে আশা প্রকাশ করছি। এছাড়াও জনসভা সংশ্লিষ্ট যাবতীয় অফিসিয়াল কর্মকাণ্ডও চুড়ান্ত পর্যায়ে।
অতএব, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামিক ফ্রন্ট ঘোষিত ইতিবাচক ও শান্তিপূরণ এসব কর্মসূচি সমূহ সম্প্রচার মিডিয়ায় যথাযথভাবে প্রচার পূর্বক আমাদের কৃতার্থ করবেন। আপনাদের সকলকে পূনর্বার ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপ্ত করছি।
শুভেচ্ছান্তে
মাওলানা মোশাররফ হোসেন হেলালী
আহবায়ক
জনসভা প্রস্তুতি কমিটি
স ম হামেদ হোসাইন
সচিব
জনসভা প্রস্তুতি কমিটি